সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ
দুই শিশুকে যৌন নিপীড়ন, বৃদ্ধ গ্রেফতার এনায়েতপুরে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন চৌদ্দগ্রামে ঘুমের ঘরে ড্রাইভার মিলন নিহত বাংলাদেশকে বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায় এনসিপি মুজিববর্ষে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের অভিযোগ হাসিনা-রেহানার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করল ভারত শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় তুরিন আফরোজ ৪ দিনের রিমান্ডে চৌদ্দগ্রাম পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের এস এস সি পরীক্ষার্থীদের বার্ষিক মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গ্লোবাল স্ট্রাইকে’ সংহতি প্রকাশ, র‍্যালী ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে চৌদ্দগ্রামে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত মার্কিন শুল্ক ইস্যুতে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ট্রাম্পকে চিঠি দিলেন ড. ইউনূস অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও লাইসেন্স না থাকায় চৌদ্দগ্রামে দুই হোটেলকে জরিমানা শহিদ মিনারে ২ দফা দাবি নিয়ে ‘বিডিআর কল্যাণ পরিষদের’ অবস্থান জুলাই গণহত্যার দুই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল এ মাসেই চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন আহ্বায়ক কামরুল হুদা, সদস্য সচিব ইঞ্জিঃ শাহ আলম

লেবাননের রাজনীতিতে হারিরির প্রত্যাবর্তন, সরকারের সমর্থনে ঐক্যের ডাক

রফিক হারিরির হত্যার ২০তম বার্ষিকীতে আবারও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি। শুক্রবার এক ঘোষণায় তিনি বলেছেন তার দল ফিউচার মুভমেন্ট রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করবে। তিন বছর ধরে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পর তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।

হারিরি বলেন, তার প্রয়াত পিতার প্রতিষ্ঠিত দল তাইফ চুক্তি, রাষ্ট্র গঠন, পুনর্গঠন ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের আদর্শে অটল থাকবে।  তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা শুধু এমন একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্র চাই, যেখানে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কোনো অস্ত্র থাকবে না।

শুক্রবার সকাল থেকেই বৈরুত, বেকা ও উত্তর লেবানন থেকে হাজারো সমর্থক শহীদের চত্বরে জমায়েত হয়, লেবানিজ পতাকা ওড়ায় এবং হারিরির নামে স্লোগান দেয়।

তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘রফিক হারিরির অনুসারীরা এখানেই আছে, এবং আপনার কণ্ঠস্বর প্রতিটি জাতীয় মুহূর্তে শোনা যাবে। সময় এলেই সবকিছু হবে।’

হারিরি বলেন, ‘আমাদের এখন একজন প্রেসিডেন্ট, একটি সরকার এবং নতুন আশা রয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের উদ্বোধনী ভাষণ ও বিবৃতিতে প্রকাশ পেয়েছে। এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ, এবং আমরা এটিকে সমর্থন করি, কোনো ষড়যন্ত্র বরদাশত করব না।’

দক্ষিণ লেবানন, বেকা ও বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের উদ্দেশ্যে হারিরি বলেন, ‘আপনারা এই সুযোগের অংশীদার। আপনাদের ছাড়া এটি সম্ভব নয়। আপনারা যদি নিজেরা বাধা হয়ে দাঁড়ান, আধিপত্য বিস্তার ও অস্ত্রের মাধ্যমে শাসনের প্রতিচ্ছবি বহন করেন, তবে উন্নয়ন সম্ভব হবে না। আমাদের আরব বিশ্বের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়ে তুলতে হবে, রাষ্ট্রের বৈধতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং শুধুমাত্র জাতীয় সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীই লেবাননের রক্ষক হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটি স্বাভাবিক রাষ্ট্র মানে এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে অস্ত্র কেবল সেনাবাহিনী ও বৈধ নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে থাকবে, যেখানে অর্থনীতি স্বাধীন, উৎপাদনশীল এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। এটি এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে বিচারব্যবস্থা স্বাধীন, আইন সমুন্নত, স্বাধীনতা সুরক্ষিত, এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।’

হারিরি বলেন, ‘যারা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, তাদের আশ্রয় দেওয়া নাগরিকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’ তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ থেকে বেকা, বৈরুত থেকে এর দক্ষিণাঞ্চল—আমরা সবাই একসঙ্গে দুঃসময়ে পাশে ছিলাম। এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে পুনর্গঠনে মনোযোগ দিতে হবে।’

তিনি প্রেসিডেন্ট ও সরকারকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘একটি কার্যকর রাষ্ট্র গঠনে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব। আমাদের আঞ্চলিক ভূমিকা পুনরুদ্ধার এবং আরব বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করতে হবে।’

হারিরি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও লেবাননের সেনাবাহিনীর প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন ঘোষণা করেন, বিশেষত জাতিসংঘের রেজ্যুলেশন ১৭০১ বাস্তবায়নে এবং ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসান জান।

সিরিয়ার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে হারিরি বলেন, ‘আমরা সিরিয়ার জনগণের স্বপ্ন ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পক্ষে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার: একটি স্থিতিশীল, পুনর্গঠিত সিরিয়া, যা লেবাননের সঙ্গে সমান মর্যাদায় সম্পর্ক বজায় রাখবে, যেখানে উভয় দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা নিশ্চিত থাকবে।’

ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে হারিরি বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের অধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানই একমাত্র পথ।’ তিনি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে সমালোচনা করে বলেন, ‘নেতানিয়াহুর সমস্যা হলো, তিনি যুদ্ধকে প্রাধান্য দেন এবং শান্তি এড়িয়ে যান।’

তিনি মিশর, জর্ডান এবং সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলোর স্বার্থের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের চেষ্টা নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন।

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন রফিক হারিরিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘তিনি প্রকৃত অর্থে একজন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘তার রাজনৈতিক অবস্থান জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করেছে, নাগরিক শান্তি রক্ষা করেছে এবং তাইফ চুক্তির বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’

হারিরির সমাধির কাছে আয়োজিত স্মরণসভায় লক্ষাধিক লেবানিজ জনগণ উপস্থিত ছিল, যাদের মধ্যে ফিউচার মুভমেন্টের সমর্থকরাও ছিল।

এদিকে, বৈরুতের আকাশে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা গেছে।

অন্যদিকে, লেবানন ও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈরুত থেকে ফিরতে ইচ্ছুক লেবানিজ যাত্রীদের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।  লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ রাজ্জি বলেন, ‘তেহরানে লেবাননের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া চলছে।’

বৃহস্পতিবার রাতে বৈরুত বিমানবন্দরের রাস্তাগুলো বিক্ষোভকারীদের অবরোধের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, যা পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে খুলে দেওয়া হয়।

হিজবুল্লাহর শত শত সমর্থক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে এবং অভিযোগ করে যে ‘লেবাননের সরকার ইসরাইলি ও মার্কিন চাপে নতি স্বীকার করেছে’।

ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্র আবিখাই আদ্রাই দাবি করেন, ‘কুদস ফোর্স ও হিজবুল্লাহ বৈরুত বিমানবন্দরকে অর্থ পাচারের জন্য ব্যবহার করছে।’

এই প্রেক্ষিতে লেবাননের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানায়, বৈরুত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই বাস্তবায়িত হবে।

ফেব্রুয়ারি ১৮ পর্যন্ত ইরানের ফ্লাইট সূচিতে সাময়িক পরিবর্তন আনা হয়েছে।

একজন রাজনৈতিক সূত্র জানায়, ‘প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, উড়োজাহাজটি হিজবুল্লাহর জন্য অর্থ বহন করছিল, যা নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করেছে।’

হিজবুল্লাহর নেতা ইব্রাহিম আল-মুসাওয়ি ইসরাইলের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘ইসরাইল একাধিকবার লেবাননের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এতে সহযোগিতা করছে। আমরা রাষ্ট্রকে ইসরাইলি হুমকির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন

2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩